শিক্ষা সমস্যা
জাতীয় শিক্ষাপরিষদের সভ্য আমার কয়েকজন শ্রদ্ধেয় সুহৃদ্ এই পরিসদের স্কুল-বিভাগের একটি গঠন তৈরী করার জন্য আমার উপরে ভার দিয়েছিলেন৷
তাঁহাদের অনুরোধ রক্ষা করতে বসে দেখলাম কাজটা সহজ নয়৷ কেননা, গোড়ায় জানা উচিত এই সংকল্পিত কারণবীজটি কী, ইহার মুলে কোন ভাব আছে৷ আমার তাহা জানা নাই৷
আমাদের শাস্তে্র বলে, বাসনাই জন্মপ্রবাহের কারণ, বস্তুপুঞ্জের আকস্মিক সংগঠনই জন্মের হেতু নহে৷ যদি বাসনার ছেদ হয় তবে গোড়া কাটা পড়ে জন্মমৃ্ত্যুর অবসান হইয়া যায়৷
তেমনি বলা যায়, ভাব জিনিসটাই সকল অনুষ্ঠানের গোড়া৷ যদি ভাব না থাকে তবে নিয়ম থাকতে পারে, টাকা থাকতে পারে, কমিটি থাকতে পারে, কিন্তু কর্মের শিকড় কাটা পড়ে এবং শুকিয়ে যায়৷
তাই গোড়াতেই প্রশ্ন উদয় হয় যে জাতীয় শিক্ষাপরিষতটি কোন ভাবের প্রেরেণায় জন্মগ্রহণ করে৷ দেশে সম্প্রতি যে-সকল বিদ্যাশিক্ষার ব্যবস্থা আছে তারা মধ্যে কোন্ ভাবের অভাব ছিল যাতে সেই শিক্ষা সম্পূর্ণ হইতেছিল না, এবং প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ে সেই ভাবটিকে কোথায় স্থান দেওয়া হয়৷
জাতীয় শিক্ষাপরিষত শুধু যদি কারুবিদ্যালয়-স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় তাহা হলে বুঝতাম যে, একটা বিশেষ সংকীর্ণ প্রয়োজন সাধন করাই এর উ্দ্দেশ্য৷ কিন্তু যথন দেখা যায় সাধারণত দেশের সমস্ত শিক্ষার প্রতি পরিষত দৃষ্টি রাখতে চান তখন এই জিজ্ঞাসা মনে উঠে, কোন ভাবে এই শিক্ষাকার্য চলবে৷ কোন্ নিয়ম চলবে এবং কী কী বই পড়াবে সে সমস্ত বাইরের কথা৷
ইহা উত্তরে যদি কেউ বলেন জাতীয় ভাবে শিক্ষা দেয়া হয় বা হবে তবেই প্রশ্ন উঠবে, শিক্ষা সম্বন্ধে জাতীয় ভাব বলতে কী বুঝায়? জাতীয় শব্দটার কোনো সীমানির্দেশ হয় না, হাওয়াও শক্ত৷ কোন্টা জাতীয় এবং কোনটা জাতীয় নয়, শিক্ষা সুবিধা ও সংস্কার অনুসারে ভিন্ন লোকে তাহা ভিন্ন রকমে স্থির করে৷
অতএব শিক্ষাপরিষদের মূল ভাবটি সম্বন্ধে গোড়াতেই দেশের লোকে সকলে মিলিয়া একটা বোঝাপড়া হওয়া দরকার৷ ইংরেজ সরকারের প্রতি রাগ করে আমার এই কাজে প্রবৃত্ত হইয়াছি, এ কথা এই মূহুর্তের জন্য মনে স্থান দিতে পারি না৷ দেশের অন্তঃকরণ একটা কিছু অভাব বোধ করছি৷ একটা কিছু চাই, সেইজন্য আমরা দেশের সেই ক্ষুধা-নিবৃত্তি করতে একত্রিত হয়েছে এই কথাই সত্য৷
আমরা চাই, কিন্তু কী চাই তাহা বাহির করা যে সহজ তা মনে করি না৷ এই সম্বন্ধে সত্য-আবিস্কারের পরেই আমাদের উদ্ধার নির্ভর করে৷ যদি ভুল করি -হাতের কাছেই আছে< আমরা যেটাই অভ্যস্ত, জড়ত্ববশত যদি সেইটেকেই সত্য মনে করি, তবে বড়ো বড়ো নাম আমাদিগকে বিফলতা থেকে রক্ষা করেতে পারে না৷
আমরা চাই, কিন্তু কী চাই তাহা বাহির করা যে সহজ তা মনে করি না৷ এই সম্বন্ধে সত্য-আবিস্কারের পরেই আমাদের উদ্ধার নির্ভর করে৷ যদি ভুল করি -হাতের কাছেই আছে< আমরা যেটাই অভ্যস্ত, জড়ত্ববশত যদি সেইটেকেই সত্য মনে করি, তবে বড়ো বড়ো নাম আমাদিগকে বিফলতা থেকে রক্ষা করেতে পারে না৷
Comments
Post a Comment